মাত্র ৪ টি শর্ত মেনেই ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব

Share This Post

৪ টি শর্ত মেনেই ফ্যাটি লিভার নিরাময় সম্ভবঃ

(কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য এসব শর্ত মেনে দেহের বাড়তি ওজন কমাতে হবে, দেহের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হলে প্রয়োজনে আরও সময় নিতে হবে এবং প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৩ কেজির বেশি শারীরিক ওজন কমানো যাবে না)

(১) প্রত্যহ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা।
স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীগণ পিটিতে যে ব্যায়াম করে সেই ধরনের ব্যায়ামই প্রতি দিন অন্তত ৩০ মিনিট হতে ১ ঘন্টা পর্যন্ত বাসায় বড় খোলামেলা ঘরে, বারান্দায় কিংবা ছাদে করা যেতে পারে।

(২) সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখার অভ্যাস তৈরি করা।
সেহরি ও ইফতারে পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
রোজা রাখায় দেহকোষ ও লিভারে অটোফেজি হয় এবং দেহে ফ্যাট অ্যাডাপটেশন ঘটে।

(৩) নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হওয়া

একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত) নিম্নোক্ত খাবারসমূহ খুব কম পরিমাণে খেতে হবে কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে পরিহার করতে হবে –

১) অধিক শর্করাযুক্ত খাবার (যা পরবর্তীতে চর্বি বা ফ্যাট হিসেবে শরীরে জমা হয়) —
ভাত, রুটি, পাউরুটি, আলু, মূলা,
চিনি, মিষ্টি, গুড়
মিষ্টি জাতীয় খাবার (মিষ্টি দই, রসমালাই, ফিরনি, পায়েস, লাচ্ছা সেমাই ইত্যাদি)
মিষ্টি জাতীয় ফল
এনার্জি ড্রিংকস
সফট ড্রিংকস
আর্টিফিসিয়াল জুস
কার্বোনেটেড বেভারেজ
মিষ্টি চকলেট, বিস্কুট, কেক, পেস্ট্রি
চিড়া, মুড়ি ইত্যাদি।

২) বাজে তেল ও তেলসমৃদ্ধ খাবার (যা আমাদের রক্ত নালীতে জমে ব্লক তৈরি করে যেমন আমাদের ব্রেইনে স্ট্রোক, হার্টে অ্যাটাক এবং লিভারে চর্বি জমিয়ে ফ্যাটি লিভার ঘটায়) —
সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, রাইসব্র্যান, ক্যানোলা তেল ও উচ্চ তাপমাত্রায় পরিশোধিত তেল
গরু, খাসির মাংসের চর্বি ও ভুঁড়ি
মগজ, কলিজা
হাঁসের মাংস
ননীযুক্ত দুধ
ফিরনি, সেমাই, পুডিং,

৩) ফাস্ট ফুড ও প্রসেসড খাবার —
ডুবো তেলে ডীপ ফ্রাই করা খাবার (সিঙ্গারা, সমুচা, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, মোগলাই পরোটা, চিকেন ফ্রাই, ফ্রেন্চ ফ্রাই)
খিচুড়ি, বিরিয়ানি, পোলাও, কাচ্চি, রেজালা
বার্গার, হটডগ, শর্মা, পাস্তা ইত্যাদি।

সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত লিভার-বান্ধব ফ্যাটি লিভার নিরাময়কারী স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যেতে পারে –

১) ডিম – কুসুমসহ প্রত্যহ ২-৩ টি।

২) দুধ না খেয়ে দুধের তৈরি টক দই, ঘি, মাখন, পনির, ঘোল, মাঠা, লাবান, লাচ্ছি (চিনি ছাড়া) খাওয়া যেতে পারে।

৩) রান্নায় স্বাস্থ্য সম্মত তেলের ব্যবহার – ঘানি ভাঙা সরিষার তেল, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল ইত্যাদি।

৪) সকল প্রকার তাজা রংধনু রঙের শাক সবজি।

৫) সালাদ – শশা, টমেটো, গাজর, কাঁচা মরিচ, পিঁয়াজ, লেবু, সিদ্ধ ডিম, ঘি, গুল মরিচের গুঁড়ো এবং ঘানি ভাঙা সরিষার তেল দিয়ে তৈরি করা সালাদ।

৬) সকল প্রকার মাছ বিশেষ করে তেলসমৃদ্ধ মাছ (ইলিশ মাছ, আইড়, চিতল, রুই, কাতলা, বোয়াল, কোরাল) – ঘি দিয়ে ভাজা।

৭) মুরগির মাংস, কবুতর, কোয়েল পাখির মাংস (ঘানি ভাঙা সরিষার তেলে রান্না অথবা ঘি দিয়ে ভাজা চিকেন ফ্রাই)।

৮) সপ্তাহে ১-২ দিন ঘাস খাওয়া গরু, খাসির চর্বিবিহীন মাংস।

৯) ঘি দিয়ে ভাজা সকল প্রকার বাদাম।

১০) পরিমাণ মতো চিনি ছাড়া গ্রীন টি, কফি, বুলেট কফি ইত্যাদি।

১১) বেশি করে টক জতীয় ফল খাওয়া যেতে পারে – আমলকী, পেয়ারা, আমড়া, জাম্বুরা, লেবু, টমেটো… এছাড়া পরিমাণ মতো মৌসুমি ফল – আনারস, তরমুজ, বেল, আতা, সফেদা, ইত্যাদি।

(৪) ওষুধ সেবন
ওবেটিকোলিক অ্যাসিড
৬ মাস থেকে ১ বছর – প্রয়োজন মতো।

ডাঃ এম সাঈদুল হক
সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চীফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার।
০১৭০৩-৭২৮৬০১, ০১৭১০-০৩২১৫৮
০১৯২৭-০৬৮১৩৬, ০১৮৬৫-৫০৪০২৬

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

আলসারেটিভ কোলাইটিস, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার
লিভার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে হতে পারে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার আলসারেটিভ কোলাইটিস যথাযথভাবে চিকিৎসা করা না হলে কোলোরেকটাল ক্যান্সার হয়ে প্রতি ৬ জনের একজন মৃত্যুবরণ করতে পারে।

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?
অন্যান্য

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?

হায়াটাস হার্নিয়া হলো যখন ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা’র মাংসপেশীর দুর্বলতার কারণে পাকস্থলীর অংশবিশেষ বুকের দিকে উঠে আসে। ফলশ্রুতিতে এসিড রিফ্লাক্স হয়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়।