হেপাটাইটিস এ বি সি ডি ই এই পাঁচ প্রকার হেপাটোট্রপিক ভাইরাস যারা লিভারে প্রদাহজনিত রোগ সৃষ্টির মাধ্যমে মারাত্মক জটিলতা অর্থাৎ লিভার সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যান্সার তৈরি করতে পারে তার মধ্যে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই ভাইরাস একিউট হেপাটাইটিস অর্থাৎ অনধিক ৬ মাসের কম সময়ের জন্য লিভারে প্রদাহ তৈরি করে প্রাকৃতিক নিয়মে নিরাময় লাভ করে কিংবা কখনও কখনও জটিলতা স্বরূপ লিভার ফেইলিউর এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের ৩য় ট্রাইমেস্টারে হেপাটাইটিস ই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে লিভার ফেইলিউর হয়ে জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি হয় বিশেষ করে সেই সময়ে মুখের স্বাদ পরিবর্তন হওয়ার কারণে বাইরের খাবার অর্থাৎ আচার, চাটনি, চটপটি, ফুচকা, দই ফুচকা, ঝালমুড়ি, ভেলপুরি ইত্যাদি স্ট্রিট ফুডে আসক্তির জন্য এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার আবির্ভাব ঘটে।
হেপাটাইটিস এ ভাইরাস সাধারণত শিশু কিশোরদের হয় এবং হেপাটাইটিস ই ভাইরাস সাধারণত বড়দের হয় যা খাদ্য ও পানি বাহিত রোগ।
হেপাটাইটিস এ এবং ই ভাইরাস সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে নিঃসৃত হয় এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতা না মানায় ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলায় কোন ভাবে এই ভাইরাস খাবার ও পানির মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়।
তাই আমরা এধরণের খাদ্য ও পানি বাহিত ভাইরাসজনিত জন্ডিস থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলবো—
১) ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলবো
২) সর্বদা সাবান পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবো
৩) কোন কিছু খাবার আগে এবং টয়লেট সেরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে
৪) স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ করবো
৫) স্ট্রিট ফুড (রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর মুখরোচক খাবার যেমন চটপটি, ফুচকা, দই ফুচকা, আচার, চাটনি, ঝালমুড়ি, ভেলপুরি, কাবাব, বিরিয়ানি, ফলের জুস, আখের রস, বিভিন্ন প্রকার শরবত ইত্যাদি) পরিহার করবো
৬) বিয়ে বাড়ির বোরহানি কিংবা সালাদ খাবো না
৭) প্রতিরোধী ব্যবস্থা হিসেবে হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের টিকা বা ভ্যাকসিন গ্রহণ করবো
৮) যারা ইতিমধ্যে অন্য কোন লিভার রোগে আক্রান্ত বিশেষ করে ক্রনিক হেপাটাইটিস বি এবং সি, ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস, ডিকমপেনসেটেড লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার ইত্যাদি তাদের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করবো
৯) সুপেয় ও জীবাণুমুক্ত পানি খাবো এবং ব্যবহার করবো
১০) পৌর নগরে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত পানি অবশ্যই উচ্চ তাপে ফুটিয়ে কিংবা জীবাণুমুক্ত করে পান করবো এবং ব্যবহার করবো।
ডাঃ এম সাঈদুল হক
সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চীফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার।
০১৭০৩-৭২৮৬০১, ০১৭১০-০৩২১৫৮
০১৯২৭-০৬৮১৩৬, ০১৮৬৫-৫০৪০২৬