লিভার সিরোসিস হতে পরিত্রাণের উপায়

Share This Post

লিভার হলো আমাদের দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা—

গৃহীত খাবার বিপাক, প্রসেস, মজুদ করে এবং প্রয়োজনীয় অংশ শরীরের ক্ষয়পূরণ, গঠন, বৃদ্ধি ও চালিকা শক্তিতে কাজে লাগায়;

গৃহীত খাবারের সাথে আগত রোগ জীবাণু ধ্বংস করে ;

গৃহীত খাবারের সাথে আগত বিভিন্ন রাসায়নিক, বিষাক্ত পদার্থ নির্বিষ করে ;গৃহীত ওষুধ প্রসেস করে দূরবর্তী ক্ষতস্থানে প্রেরণ করে এবং রোগ নিরাময় করে ;

দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ব্যাপভিত্তিক ভূমিকা পালন করে।

লিভার সিরোসিস হলে পরে লিভারের কোষ নষ্ট হয়ে গুটি বা Regenerative nodules তৈরি হয় যার ফলে লিভারের স্বাভাবিক মসৃণ আকার আকৃতি বিনষ্ট হয়ে এবড়ো খেবড়ো কদাকার আকৃতি ধারণ করে এবং এসব গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীর মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে।

লিভার সিরোসিস রোগীর যত্ন।

তাই লিভার সিরোসিস হওয়ার পূর্বেই তা হতে পরিত্রাণে সচেষ্ট থাকাই শ্রেয়।

১) দেহের স্থূলতা কমিয়ে নির্দিষ্ট ওজন বজায় রাখা ;

২) ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্ত চাপের সঠিক যথোপযুক্ত চিকিৎসা করা এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা ;

৩) প্রত্যহ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা ;

৪) সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখার অভ্যাস তৈরি করা ;

৫) বাজে তেল, অধিক শর্করা জাতীয় খাবার, ফাস্ট ফুড, প্রসেসড খাবার, এনার্জি ড্রিংকস, স্ট্রিট ফুড, ধূমপান, মদ্যপান, মাদকসেবন, অনিদ্রা, অধিক রাত জাগা ইত্যাদি বদঅভ্যেস পরিহার করা ;

৬) নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের ব্যবস্থা করা ;

৭) জীবাণুমুক্ত সূঁচ সুতা, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, ডেন্টাল যন্ত্রপাতি, বিউটি পার্লারে নাক, কান ফোঁড়ানো বা উল্কি আঁকার কাজে ব্যবহৃত জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের প্রচলন করা ;

৮) ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবীদের ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা ;

৯) গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত মায়ের যথোপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া;

১০) হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত মায়ের সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই ১২ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাকসিন ও ইমিউনোগ্লোবিউলিন দিয়ে দিতে হবে ;

১১) আক্রান্ত স্বামী কিংবা স্ত্রী দৈহিক মিলনে কনডম ব্যবহার করবেন এবং অতি সত্বর আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসা নিবেন এবং অপরজন আক্রান্ত না হলে টিকা নিয়ে নিবেন ;

১২) অরক্ষিত ও অনৈতিক যৌন মিলনে বিরত থাকতে হবে ;

১৩) সর্বোচ্চ নৈতিক মানদণ্ড সম্পন্ন জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে হবে এবং ধর্মীয় অনুশীলনগুলো মেনে চলার অভ্যাস তৈরি করতে হবে ;

১৪) সার্বজনীনভাবে সবার হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে কি না তা পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে হবে এবং যার নেই তাকে অবিলম্বে টিকা বা ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে হবে ;

১৫) দীর্ঘ মেয়াদে ব্যথানাশক ওষুধ যেমন Methotrexate গ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লিভার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে।

ডাঃ এম সাঈদুল হক

সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

চীফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার।

০১৭০৩-৭২৮৬০১, ০১৭১০-০৩২১৫৮

০১৯২৭-০৬৮১৩৬, ০১৮৬৫-৫০৪০২৬

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

আলসারেটিভ কোলাইটিস, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার
লিভার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে হতে পারে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার আলসারেটিভ কোলাইটিস যথাযথভাবে চিকিৎসা করা না হলে কোলোরেকটাল ক্যান্সার হয়ে প্রতি ৬ জনের একজন মৃত্যুবরণ করতে পারে।

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?
অন্যান্য

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?

হায়াটাস হার্নিয়া হলো যখন ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা’র মাংসপেশীর দুর্বলতার কারণে পাকস্থলীর অংশবিশেষ বুকের দিকে উঠে আসে। ফলশ্রুতিতে এসিড রিফ্লাক্স হয়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়।