মানসিক চাপ থেকে মুক্তির পেতেঃ
মানসিক উদ্বেগ অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তার কারণে মানসিক চাপ তৈরি হয় আর মানসিক চাপের প্রভাবে মানুষের মনের শক্তি কমে যায়, মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, কাজে আলস্য, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করা, মনের মাঝে ভীতি কিংবা বিরক্তি, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, অল্পতেই ক্ষেপে যাওয়া কিংবা নির্বিকার নির্লিপ্ত ভাব প্রকাশ পায়।
ফলশ্রুতিতে পরিবারে অশান্তি, দাম্পত্য কলহ, ঝগড়া বিবাদ, আন্তঃসম্পর্ক বিনষ্ট হওয়া, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগ ; কারণে অকারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে অর্থনাশ ইত্যাদি কারণে জীবনে পিছিয়ে পড়তে হয়।
মনো-দৈহিক রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায় – আইবিএস, গ্লোবাস হিস্টেরিকাস, ফাংশনাল বা সাইকোজেনিক ভমিটিং, নন-আলসার ডিসপেপসিয়া, ফাংশনাল ডিসপেপসিয়া, ফাংশনাল অ্যাবডোমিনাল পেইন, ফাইব্রোমায়ালজিয়া ইত্যাদি।
তাই মানসিক চাপ নিরসন করে হাসি খুশি ও উৎফুল্ল জীবন যাপন করা আমাদের সবার জন্যই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আর মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায় হলোঃ
১. শারীরিক ওজন বেশি হলে তা কমাতে হবে,
২. পরিমিত বিশুদ্ধ ও সুষম খাবার খেতে হবে (সাথে টক ফল যেমন লেবু, কমলা লেবু, জাম্বুরা, আমলকী, আমড়া, কামরাঙ্গা এবং গ্রীন টি অনেক উপকারী)
৩. পর্যাপ্ত অর্থাৎ দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে,
৪. রাতের খাবার আগেই গ্রহণ করতে হবে এবং রাত ৯টা – ৯ঃ৩০ এর মধ্যেই ঘুমিয়ে যেতে হবে,
৫. অধিক রাত জাগা যাবে না,
৬. খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হবে,
৭. দিনের বেলা শোওয়া যাবে না,
৮. প্রত্যহ নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম অন্তত ১ ঘন্টা করতে হবে (যেটা মন ভালো রাখে, শরীরের ব্যথা বেদনা কমায়, ঘুমের কোয়ালিটি বাড়ায় এবং আত্মপ্রত্যয়ী করে তোলে),
৯. যোগ ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে (যেটা উচ্চ রক্তচাপ কমায়, হৃৎস্পন্দন কমায়, মনের অস্থিরতা কমায়),
১০. মেডিটেশন করা,
১১. গভীর শ্বাস প্রশ্বাস এর ব্যায়াম করা,
১২. হৃদয় ছোঁয়া, কালজয়ী গান শোনা,
১৩. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আজানের সাথে সাথে আদায় করার অভ্যাস করা (যার যার ধর্ম অনুযায়ী নিয়মিত উপাসনা করা),
১৪. দুশ্চিন্তা পরিহার করা,
১৫. অ্যারোমা থেরাপি — ভালো সুগন্ধি’র ব্যবহার,
১৬. চুইংগাম চিবানো,
১৭. পরিবার পরিজন ও বন্ধু বান্ধব এর সাথে সময় কাটানো,
১৮. চা, কফি, চকোলেট ও এনার্জি ড্রিংক পরিহার করা,
১৯. ধূমপান ও অন্য কোনো বদঅভ্যাস থাকলে পরিহার করা,
২০. সর্বদা হাসি খুশি থাকা (কৌতুকরসবোধময় জীবন যাপন করা, হাস্যরসবোধময় বন্ধু বান্ধবের সাথে সময় কাটানো, কমেডি শো দেখা),
২১. সর্বদা পজিটিভ চিন্তা করা,
২২. সাধ্যাতীত কাজের চাপ বা দায়িত্ব না নেওয়া,
২৩. কোন কাজটি আগে করতে হবে সেটি ঠিক করেই কাজ ধরতে হবে,
২৪. যেসব খাবার খেলে পেটের সমস্যা বেড়ে যায় তা পরিহার করা,
২৫. নিম্নোক্ত খাবার খেলে মানসিক চাপ কমে —-
সামুদ্রিক মাছ ও তেল সমৃদ্ধ মাছ – (ইলিশ মাছ, স্যালমন মাছ)
কালো চকোলেট,
লাচ্ছি, ঘোল, মাঠা
গ্রীন টি।
ডাঃ এম সাঈদুল হক
সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চীফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার।
০১৭০৩-৭২৮৬০১, ০১৭১০-০৩২১৫৮
০১৯২৭-০৬৮১৩৬, ০১৮৬৫-৫০৪০২৬