পবিত্র মাহে রমজানে রোজা রাখা বিষয়ে লিভার রোগীদের করণীয়ঃ

Share This Post

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই পবিত্র মাসে অবশ্য পালনীয় রোজা রাখা সবার জন্যই প্রযোজ্য। তবে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে অর্থাৎ চূড়ান্ত লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য শিথিলতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আজানের সাথে সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা, বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, দোয়া ইস্তেগফার পড়া, কোরআন তিলাওয়াত করা, গরীব মুসাফিরদের খাওয়ানো ইফতার করানো, সদকায়ে জারিয়া স্বরূপ বেশি বেশি দান সদকা করা, মানুষের মনে কষ্ট না দেওয়া, সবার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদি রোজা রাখতে অপারগতার বিকল্প হতে পারে।

যাঁরা রোজা রাখতে পারবেন —

* কম্পেনসেটেড লিভার সিরোসিস অর্থাৎ জটিলতা বিহীন লিভার সিরোসিস (যাঁদের পেটে কিংবা পায়ে পানি, রক্ত বমি, কালো পায়খানা, জন্ডিস, ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যা নেই)।

* ফ্যাটি লিভার আক্রান্ত ব্যক্তি (রোজা ফ্যাটি লিভার নিরাময়ে সহায়ক)।

* ক্রনিক হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি (যাঁদের রক্তে ভাইরাস মৃত বা নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে)।

* ক্রনিক হেপাটাইটিস বি কিংবা ক্রনিক হেপাটাইটিস সি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি (যাঁদের রক্তে ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে)।

* লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তি যাঁদের লিভারের কার্যক্ষমতা অক্ষুন্ন রয়েছে।

* লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট গ্রহীতা রোগী যাঁর লিভার স্বাভাবিকভাবে কার্যক্ষম রয়েছে।

* গিলবার্ট’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি পর্যাপ্ত বিশ্রামে থেকে এবং হালকা দৈনন্দিন কাজ করেও রোজা রাখতে পারবেন।

* উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা নিয়ে স্থিতিশীল উইলসন’স ডিজিজ, হিমোক্রোম্যাটোসিস কিংবা থ্যালাসেমিয়া রোগীরাও রোজা রাখতে পারবেন।

যাঁরা রোজা রাখতে অপারগ —

* একিউট হেপাটাইটিস বা লক্ষ্মণ উপসর্গযুক্ত জন্ডিসে আক্রান্ত ব্যক্তি (একই সাথে চোখ এবং প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া, খাবারে অরুচি, বমি কিংবা বমি বমি ভাব, জ্বর কিংবা জ্বরের অনুভূতি, শরীর ব্যথা কিংবা জ্বালা পোড়া করা, পেটের উপরিভাগে ডান দিকে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি লাগা)

* ডিকম্পেনসেটেড লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি যাঁদের বর্তমানে-

 – জন্ডিস অথবা পেটে পানি রয়েছে।

 – রক্ত বমি এবং কালো পায়খানার সমস্যা আছে।

 – খাদ্য নালীর নিচের অংশের ফুলে যাওয়া রক্ত নালীতে ব্যান্ড পরিয়ে EVL এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়েছে।

 – হেপাটিক এনকেফালোপ্যাথি (স্থান কাল পাত্র জ্ঞান হারিয়ে অসংলগ্ন আচরণ) দেখা দিয়েছে।

 – সঙ্গে ডায়াবেটিস আছে এবং ঘন ঘন হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

 * চূড়ান্ত ভাবে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তি যাঁদের লিভারের কার্যক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ডাঃ এম সাঈদুল হক

সহকারী অধ্যাপক, লিভার বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

চীফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা গ্যাস্ট্রো-লিভার সেন্টার।

০১৭০৩-৭২৮৬০১, ০১৭১০-০৩২১৫৮

০১৯২৭-০৬৮১৩৬, ০১৮৬৫-৫০৪০২৬

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

আলসারেটিভ কোলাইটিস, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলোরেকটাল ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার
লিভার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার

আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে হতে পারে মরণব্যাধি কোলন ক্যান্সার আলসারেটিভ কোলাইটিস যথাযথভাবে চিকিৎসা করা না হলে কোলোরেকটাল ক্যান্সার হয়ে প্রতি ৬ জনের একজন মৃত্যুবরণ করতে পারে।

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?
অন্যান্য

হায়াটাস হার্নিয়া কি কঠিন কোন রোগ?

হায়াটাস হার্নিয়া হলো যখন ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা’র মাংসপেশীর দুর্বলতার কারণে পাকস্থলীর অংশবিশেষ বুকের দিকে উঠে আসে। ফলশ্রুতিতে এসিড রিফ্লাক্স হয়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়।